The Mirrow

সুস্মিতা দেবের দল-বদলের নেপথ্য-কাহিনি

Share the Article
মিরো ওয়েবডেস্ক

হঠাৎ করে দল পরিবর্তন করলেন সুস্মিতা দেব। দল-বদলের ঠিক দু’দিন আগেই কংগ্রেসের রাজ্য সমিতির নতুন পদাধিকারীদের নিয়ে ‘ম্যাডাম’ সোনিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গেছিলেন। তবে সিদ্ধান্তটা যে হঠাৎ করে নেননি তা পরবর্তীতে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন।  কংগ্রেসে থাকলে যে রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার সেটা পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন পরবর্তীতে, তবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কোনো উষ্মা বা অভিযোগ করেননি। সুইচ-অভারের পর নিজের এক সর্বজনগ্রাহ্য পরিচয় পরিবেশন করতে চেয়েছেন বরং। এখানে তিনি রাজনৈতিক পরিপক্কতা দেখিয়েছেন। নতুন দলের নতুন পরিবেশে নিজেকে প্রমাণ করাই যে প্রাথমিক শর্ত সেটা তিনি বুঝতে পেরেছেন। সেটা বুঝেই মাঠে নেমেছেন। এখন দেখার বিষয় তিনি পারবেন কি?

বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বরাক উপত্যকায় কংগ্রেসের মহাজোট বিজেপির মিত্রজোট থেকে ভাল ফল করেছে, রাজ্যের বাকি অংশে যদিও কংগ্রেসের অবনমন হয়েছে। সারা দেশের মতই বরাক উপত্যকা সহ আসামে সাধারণভাবে এখনও বিজেপির প্রতি ভোটদাতাদের আস্থা রয়ে গেছে পুরোদমে। দায়িত্ব নেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা যথেষ্ট পরিকল্পিতভাবে সরকার পরিচালনা করছেন। সেদিকে দেখলে কংগ্রেসের ঘর অগোছালো বলেই মনে হচ্ছে। আর তাই কংগ্রেসে থাকলে ভবিষ্যৎ মসৃণ নয় সেটা অনুভব করেই হয়তো ঘাসফুলে ভিড়লেন সুস্মিতা। ইতিমধ্যে গিফ্‌ট হিসেবে তিনি ঘাসফুল থেকে রাজ্যসভায় মনোনীত হচ্ছেন, এটা নিশ্চিত।

রাজনৈতিক মহলে এও চর্চা রয়েছে যে সুস্মিতার মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রীর কার্যকাল সমাপ্ত হতে যাচ্ছিল। তিনি রাজ্যসভার সাংসদ পদের জন্য সোনিয়া গান্ধীর নিকট আবেদন জানিয়েছিলেন, কিন্তু ‘ম্যাডাম’ সাড়া দেননি। তাছাড়া আগামীতেও বিজেপির কাছ থেকে শিলচর সংসদীয় আসনটি ছিনিয়ে আনা কঠিন হবে, সেটা তিনি ভালই জানেন। এই সব ব্যাপারই তাকে কংগ্রেস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে বলে অনুমান করাই যায়। কিন্তু, প্রশ্ন – তৃণমূল কেন? গেরুয়া ব্রিগেডে নাম লেখালেন না কেন সুস্মিতা?

পরিপক্ক রাজনীতিবিদ হিসেবে সুস্মিতা জানেন, আসাম বিজেপিতে আজ তারকার সমাহার। সেখানে নিজের ডাল সেরকম গলবে না সেটা বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। তাছাড়া হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে তার বিগতদিনের রাজনৈতিক রসায়ন খুব একটা ভালো ছিল না। বরং আসামে তৃণমূলের প্রস্পেক্ট ভালো হবে এই আশা করেই তিনি বাংলার দিদির দলকেই বেছে নিয়েছেন। আসামে তৃণমূলের সংগঠন নেই, নিজে কর্তৃত্ব নিয়ে সংগঠন করতে পারবেন। তাছাড়া আগামীতে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ত্রিপুরাতে বিধানসভা নির্বাচন, সেখানে সরকারে থাকা বিজেপি দলের বিকল্প হিসেবে নিজেদের খাড়া করতে তৃণমূল কংগ্রেস সর্বশক্তি লাগিয়েছে। সেখানে সুস্মিতা নিজের ক্যারিশ্মা দেখাতে পারলে তার রাজনৈতিক প্রস্পেক্ট ভালো হবে সেটা অনুমান করা যায়। তাছাড়া কংগ্রেস আসামে বা দিল্লিতে কোথাও ক্ষমতায় নেই, অদূর ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনা ক্ষীণ। তৃণমূলে থাকলে নিদেনপক্ষে একটি রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে থাকছেন সেটাও নিশ্চয়ই সুইচ-ওভারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সুস্মিতার বিচারে ছিল। মোটের উপর দলবদলের এই সিদ্ধান্ত সুচিন্তিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহল।  এখন দেখার নতুন দলে, নতুন পরিবেশে তিনি নিজেকে কতটুকু প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।

3 thoughts on “সুস্মিতা দেবের দল-বদলের নেপথ্য-কাহিনি”

  1. It is known well that neither Sonia Gandhi nor her son Rajib is acceptable as the PM candidate to Indian massas. Congress could select a face for its president other than the mother and the son ( Madam and Sir) for some years. There is no dearth of effective and proficient person to become the party president. Congress leaders could understand the present psyche of Indian population who are compelled to incline themselves towards parochial right wing because of absence of competent leadership who could unite forces against BJP. Susmita understood the problem and made the tempot shift.

  2. কংগ্রেসের নেতা হিসেবে ও বিকল্প প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতের জনগণের বর্তমান মানসিকতা মুটেই সোনিয়া গান্ধী ও রাজীব গান্ধীর পক্ষে নেই। বিভিন্ন সার্ভে / স্টেটিস্টিক্স সেই কথাই বলে থাকে। বিরোধী দলগুলোর কাছে ঐ দুজন গ্রহনযোগ্যতা অর্জন করতে চাইলে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে। সেহেতু উনারা নিজ দলের কোন উপযুক্ত ব্যক্তিকে সভাপতির দায়িত্ব তুলে দিতে পারতেন। কিন্তু শতাব্দীপ্রাচীন দলটির পদ ওরা আকড়ে আছেন নির্বোধের মত। আগে কি গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ সভাপতি হননি? এই মা ও ছেলে ‘মেডাম’ ও ‘স্যার’ শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন আর দলটিকে নিরুপায় অবস্থায় ফেলেছেন। সুস্মিতা সেটা বুঝেই সম্ভবত সাময়িকভাবে কংগ্রেস ছেড়ে টিএসসিতে গেছেন।

Leave a Reply to D. K. Dey Cancel Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!