সঞ্জীব দেবলস্কর
বিদ্যাসাগর যখন লিখন ও মুদ্রণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করলেন তিনি পেলেন ১৬ টি স্বরবর্ণ,৩৪ টি ব্যঞ্জন বর্ণ। লিখন কর্মটি ছিল লিপিকরদের একান্ত মর্জি নির্ভর। কোন সমতাও ছিল না এতে। অক্ষরের মাপ,অবস্থান, চিহ্ন সমূহের প্রয়োগ এ-সব কিছুরই স্থিরতা ছিল না। এই জটিল অবস্থা দেখে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে আপামর বাঙালির লেখাপড়া হবে-টবে না। অল্প সংখ্যক বাঙালিই এই জটিল লিপি, অক্ষরের জাল অতিক্রম করে বিদ্যাচর্চায় নামবে। তিনি লিপি, বর্ণমালা সরলীকরণের যুদ্ধে নামলেন। আমরা এখন যে ১১ টি স্বরবর্ণ ৪০ ব্যঞ্জন বর্ণ পেলাম এটা তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত। আর, যে বর্ণমালার ক্রম আমরা পেয়েছি এটাও তিনি সাজিয়েছেন। সম্প্রতি যে প্রাথমিকস্তরের পাঠ্যপুস্তকে নতুন ক্রম চালু করতে চাইছেন সরকার, এটা নিতান্তই অবৈজ্ঞানিক। এ কাজে সমর্থন করা মানে ঈশ্বরচন্দ্রকে অস্বীকার করা। আপাতত আমাদের কর্তব্য হল বাংলা বর্ণমালাটি মুখস্থ করে রাখা, যা আমরা অনেকদিন আগে থেকেই ভুলে যাবার পথে চলছি। দেখুন তো অ থেকে চন্দ্রবিন্দু মুখস্থ আছে কি না। ঈশ্বরচন্দ্রের প্রতি কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে আসুন একবার কণ্ঠভরে বাংলা বর্ণমালা উচ্চারণ করি।