সব্যসাচী রায়
পাই নিয়ে একেবারে নতুন গাণিতিক রেকর্ড। পাই এর মান গণনা করা হল ৬২.৮ ট্রিলিয়ন ডিজিট পর্যন্ত, অর্থাৎ, দশমিকের পর ৬২.৮ লক্ষ কোটি ঘর। এই কৃতিত্ব সুইস গবেষকরা অর্জন করেছেন যারা এই মান বের করতে একটি কম্পিউটারে বিরামহীন ১০৮ দিন কাজ করেছেন।
তাদের এই গণনা আগের বিশ্ব রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে যা ছিল দশমিকের পর ৫০ লক্ষ কোটি ঘর অর্থাৎ ৫০ ট্রিলিয়ন ডিজিট। এছাড়া, এই হিসেব বের করতে আগের রেকর্ড থেকে প্রায় চার ভাগের এক ভাগ সময় লেগেছে। সেটাও এক রেকর্ড।
আমরা সবাই জানি, বৃত্তের পরিধিকে তার ব্যাস-দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করলে পাই আসে। আবার, এটি বৃত্তের ক্ষেত্রফলের সঙ্গে ব্যাসার্ধের বর্গের অনুপাতের সমান। এটিকে কোনো কোনো সময় বৃত্তীয় ধ্রুবক, আর্কিমিডিসের ধ্রুবক অথবা রুডলফের সংখ্যাও বলা হয়।
পাই একটি গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক ধ্রুবক। এটি একটি অমূলদ সংখ্যা যার দশমিক বর্ধন কখনও শেষ হয়না বা পুনরাবৃত্তি হয় না। মোটামুটিভাবে যার মান ৩.১৪১৫৯ বলে সাধারণ গণিতে ব্যবহার করা হয়। গ্রিক বর্ণ π দিয়ে এই সংখ্যাকে চিহ্নিত করা হয়। এই অসীম বর্ধনের ধারাটি গণিতজ্ঞদের সব সময়ই আকর্ষিত করে আসছে। তাই এর অসীম বর্ধনের মানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গণিতজ্ঞরা প্রয়াস চালিয়ে গেছে।
কিছু গাণিতিক হিসাব-নিকাশে দশমিকের বিশেষ ঘর পর্যন্ত পাই-এর মান অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পরে। এই পাই আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক্সের সাথে জড়িত অনেক ধরণের ইঞ্জিনিয়ারিং-সমস্যা সমাধানে অপরিহার্য।
যাইহোক, এটা বলতে হয় যে, দশমিকের পর ৬২.৮ লক্ষ কোটি ঘর পর্যন্ত বের করা পাই-এর এই মানের কোনো পরিচিত ব্যবহার নেই। কিছু কিছু মহাজাগতিক গণনায় দশমিকের পর সর্বোচ্চ ৩৯ ঘর পর্যন্ত পাই-এর মান ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গণিতজ্ঞদের জন্য, এটি একটি গাণিতিক ক্রীড়া – যেন খুব উঁচু এক পর্বতে আরোহণ। এটি এক গুরুতর কঠিন কাজ, এক ধরণের কম্পিউটেশনাল চ্যালেঞ্জ। এর সাথে জড়িত প্রচুর গণিতিক কৌশল এবং আজকের দিনের কম্পিউটার বিজ্ঞান।